Friday, November 2, 2018

কাপ্তাই লেক সবুজ আর নির্মল প্রকৃ্তির হাতছানি (Kaptai Lake, which is decorated with beautiful looks.)

Kaptai lake

কাপ্তাই লেক বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। কাপ্তাই লেক, যার চার পাশে সৌন্দর্যের অপরুপ সাজে সজ্জিত। ২৫৬ বর্গমাইলের এই কৃত্রিম হ্রদটি দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় হ্রদ। দেশীয় ও বিদেশী পর্যটক দের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। উচু নিচু পর্বতমালা, পাহাড়ী নদী, জিগ্জাগ পর্বত সড়ক, সমুদ্রের জল এবং গাঢ় সবুজ বন, বৃক্ষ-ফুল, এবং উপজাতীয় জীবনধারা কাপ্তাই লেকের বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম। হ্রদে মাছ এবং বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান উপস্থিতি এটাকে অসাধারন জীব বৈচিত্র্যের আধার হিসাবে পরিচিতি দান করেছে। এটি রাঙামাটি পাহাড়ী জেলায় অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদগুলির মধ্যে একটি। পাহাড়, ফল, বন ও ঔষধি গাছ এবং সবজি পাওয়া যায়। কাপ্তাই লেক পর্যটন, পশু, এবং জীব বৈচিত্র্যের ব্যাপক সংরক্ষণ করেছে। যদিও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল, তার বাইরেও কাপ্তাই লেক দেশের সামগ্রিক মাছ ধরার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। মাছ উৎপাদন, স্থানীয় ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়, জেলে, মাছ ব্যবসায়ীরা এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীবিকা নির্বাহ করে থাকে স্থানীয় লোকজন। কাপ্তাই লেকের আঞ্চলিক নাম কর্ণফুলি লেক চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত। কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ শেষ হওয়ার পর, 1961 সালের মে মাসে স্পিলওয়ে বন্ধ ছিল। বাঁধ নির্মাণের পূর্বে বর্তমান হ্রদটি ছোট পাহাড় ও উপত্যকায় ঘেরা একটি বিশেষ ল্যান্ডফিল ছিল। আসামের লুসাই পাহাড় থেকে গঠিত কর্ণফুলী নদী বৃহত্তর চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা কাসালং, মঈনী, রিঙ্কং এবং চেঞ্জী নদীগুলির স্থলভাগে কর্ণফুলির নামে বঙ্গোপসাগরের উপরিভাগে প্রবাহিত হয়েছিল। কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে, এই নদী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার নিম্নভূমির পাশাপাশি বৃহত্তর চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের বন্যার কারণে হ্রদ সৃষ্টি হয়েছিল।



দেশের পর্যটন খাতে ভালো একটি অবস্থানে আছে রাঙ্গামাটির এই হ্রদ। দেশী বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সেরা স্থান হতে পারে স্থানটি। পর্যটন খাত নিয়ে এমন সম্ভাবনার পাশাপাশি হতাশার দিকও আছে।অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি নীতিনির্ধারকদের আন্তরিকতা ও প্রচার নেই বলে পাহাড়ের সম্ভাবনাময় এই খাতটি এখনো পিছিয়ে আছে। পর্যটন নিয়ে তেমন কোনও প্রচার নেই। ফলে আশানুরূপ পর্যটক আসছেন না। আবার পার্বত্য পরিস্থিতিসহ নানা সমস্যার কারণে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে রাঙ্গামাটি থেকে। পাহাড়ের পর্যটনেরর যে বিশাল সম্ভাবনাময় খাত, সেটাই অনেকে বুঝতে চায় না। পর্যটক আনার জন্য যে প্রচার,বিনিয়োগ দরকার তাও হচ্ছেনা। ফলে পাহাড়ে এর সুফল আসছেনা। দেশীয় এবং বিদেশী পর্যটক দের উৎসাহ বাড়তে সত্যিকার অবকাঠামো গড়ে তোলার পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে সচেতনতা।


কাপ্তাই লেক বাংলাদেশে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রঃ 

পাকিস্তান সরকার ১৯৫৬ সালে আমেরিকার অর্থায়নে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ শুরু করে। ১৯৬২ সালে এর নির্মাণ শেষ হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এবং ইউতাহ ইন্টারন্যাশনাল ইনকর্পোরেট ৬৭০.৬ মিটার দীর্ঘ ও ৫৪.৭ মিটার উচ্চতার এ বাঁধটি নির্মাণ করে। এ বাঁধের পাশে ১৬টি জলকপাট সংযুক্ত ৭৪৫ ফুট দীর্ঘ একটি পানি নির্গমন পথ বা স্প্রিলওয়ে রাখা হয়েছে। এ স্প্রিলওয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক ফিট পানি নির্গমন করতে পারে। এ প্রকল্পের জন্য তখন প্রায় ২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা বাজেট নির্ধারণ করা হলেও পরে তা ৪৮ কোটি ছাড়িয়ে যায়


কিভাবে যাবেনঃ

রাঙ্গামাটিতে আপনি বিভিন্নভাবে পৌছাতে পারেন। রাঙ্গামাটিতে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ হানিফ, ইউনিক, সাউদিয়া, এস আলম, শ্যামলী ইত্যাদি। প্রায় ৬০০/- টাকা ভাড়ায় ৭ ঘণ্টা থেকে ৮ ঘণ্টায় আপনি ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটিতে পৌঁছে যাবেন। শ্যামলী পরিবহনের একটিমাত্র এসি বাস ছাড়া রাঙ্গামাটিতে কোন এসি বাস চলাচল করেনা। এছাড়া আপনি ঢাকা থেকে চট্রগ্রামে বাসে যেতে পারেন এবং সেখান থেকে বাসে করে রাঙ্গামাটিতে পৌছাতে পারেন। তবে, ঢাকা থেকে বাসে করে সরাসরি রাঙ্গামাটিতে যাওয়াই সহজতর হবে।

কোথায় থাকবেনঃ

আপনার সুবিধার্থে রাঙ্গামাটিতে থাকার হোটেল, মোটেল ও রেস্টহাউজগুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

১। হোটেল গোল্ডেন হিল
ঠিকানাঃ রিজার্ভ বাজার, রাঙ্গামাটি, ফোনঃ ০১৮২০৩০৪৭১৪

২। হোটেল গ্রিন ক্যাসেল
ঠিকানাঃ রিজার্ভ বাজার, রাঙ্গামাটি, ফোনঃ ৬১২০০

৩। হোটেল লেক ভিউ
ঠিকানাঃ রিজার্ভ বাজার, রাঙ্গামাটি, ফোনঃ ৬২০৬৩

৪। হোটেল সুফিয়া
ঠিকানাঃ কাঁঠালতলী, রাঙ্গামাটি, ফোনঃ ৬২১৪৫

৫। পেদা টিংটিং, ফোনঃ ৬২০৮২

কি করবেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র তে এসেঃ

রাঙ্গামাটিতে বেড়াতে আসলে আপনি এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের স্থানীয়ভাবে তৈরি সামগ্রী কিনতে পারেন। যেমনঃ গৃহস্থলীর কাজের জন্য বিভিন্ন হাতে তৈরি পণ্য, স্থানীয় আদিবাসীদের হাতে বোনা কাপড় ইত্যাদি।

কাপ্তাই লেকের আশে পাশে ভ্রমনের স্থানসমুহঃ

১. ঝুলন্ত ব্রীজ, রাঙ্গামাটি।
২. শুভ লং ঝর্ণা, রাঙ্গামাটি।
৩. কাপ্তাই বাঁধ।
৪. কর্ণফুলি নদী।
৫. নেভি একাডেমী।
৬. ক্যাবল কার।

কাপ্তাই লেকের নতুন নতুন ছবি দেখতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন।

আরো পড়ুনঃ

নকশিপল্লী পুর্বাচল যা ঢাকার কাছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র (another popular tourist spot of Bangladesh)

No comments:

Post a Comment