ভোলা জেলার মুল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলা ভূমি রূপালী দ্বীপ মনপুরা। মেঘনার কোলে লালিত চতুর্দিকে মেঘনা নদীবেষ্টিত সবুজ শ্যামল ঘেরা। সু বিশাল নদী-নালা, চতুর্দিকে বেড়ীবাঁধ, বিভিন্ন ধরনের ধানের ক্ষেত, বিশাল ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছের বাগান ও মূল ভূখণ্ডে রয়েছে শত শত হরিণের বিচরণ। ২009 সালে গিয়াসউদ্দীন সেলিমের নির্দেশে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বিখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র মুনপুরা এবং এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মুষ্টিমেয় চলচ্চিত্রগুলির অন্যতম। চলচ্চিত্রটি সেই বছরের 5 টি জাতীয় পুরষ্কার জিতেছে। সকাল বেলা সুর্য ডিমের কুসুমের মত হলুদাভ আভা ছড়িয়ে মন কে পুলকিত করে জাগিয়ে তোলে আর সন্ধ্যাবেলা লাল আভা ছড়িয়ে অন্ধকারের গহীনে লুকিয়ে পড়ে আরো একটি রঙ্গিন প্রভাতে প্রতিক্ষায়।
অবস্থান(location):
ভোলা জেলা সদর থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে মেঘনার মোহনায় ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মনপুরা উপজেলা প্রায় লক্ষাধিক লোকের বসবাস।
বর্ণনা(description):
মিয়া জমিরশাহ'র স্মৃতি বিজড়িত মনপুরা দ্বীপ অতি প্রাচীন। একসময় এ দ্বীপে পুর্তগীজদের আস্তানা ছিল। তারই নিদর্শন হিসেবে দেখতে পাওয়া যায় কেশওয়ালা কুকুর। মনপুরার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির সারিসারি বাগান।
মনপুরায় সূর্য উদয় এবং সূর্যাস্তও উপভোগ করা যায়। এখানে ছোট
বড় ১০-১৫ টি চর ও বন বিভাগের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে সবুজ বিপ্লব। মাইলের পর
মাইল সবুজ বৃক্ষরাজির বিশাল ক্যাম্পাস মনপুরাকে সাজিয়েছে সবুজের সমারোহে।
শীত মৌসুমে শতশত পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে এসব চরাঞ্চল। এই চরগুলো হলো
চর নজরুল, চর পাতালিয়া, চর পিয়াল, চরনিজাম, চর সামসুউদ্দিন, লালচর, ডাল চর,
বদনার চর, কলাতলীর চর ইত্যাদি। মনপুরা সদর থেকে দুই কিলোমিটার উত্তর পূর্ব
পাশে গড়ে উঠেছে মনপুরা ফিশারিজ লি.। খামার বাড়িতে সারি সারি নারিকেল গাছ ও
বিশাল-৪-৫টি পুকুর রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন খামার বাড়িটি হতে পারে পর্যটকদের
বাড়তি আকর্ষণ। খামার বাড়িটির পূর্ব পাশেই বিশাল ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বাগান।
এখানে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই দেখা যায়না এখানে খাবারের রীতিমত আইটেম
ছাড়াও বিশেষ বিশেষ কিছু খাবার লক্ষ করা যায়। শীতের হাঁস, মহিষের কাচা দধি,
টাটকা ইলিশ,বড় কই, জাগুর, কোরাল, বোয়াল ও গলদা চিংড়ি। মেঘনা নদী থেকে ধরে
আনা টাটকা ইলিশ ও চর থেকে আনা মহিষের কাঁচা দুধের স্বাদই আলাদা।
মনপুরার মূল ভুখণ্ডে কোরেজডেম ম্যানগ্রোব
বনে দেখতে পাওয়া যায় হরিণের পাল। প্রতিদিন বিকাল বেলা এসব হরিণ দেখতে
পর্যটকরা ভীড় করেন। মূল ভূখণ্ডে চরফৈজুদ্দিন টু সাকুচিয়া মধ্যবর্তী রয়েছে
সংযোগ বিশাল ব্রিজ। প্রতিদিন বিকাল বেলা ভ্রমণ পিপাষু মানুষেরা সুন্দরতম
ব্রিজ দেখার জন্য ভিড় করেন। এখানে না গেলে বুঝাই যাবেনা কি সৌন্দর্য
লুকায়িত আছে এই দ্বীপে। পরিকল্পনা করুন কবে যাবেন এই মানব কোলাহল মুক্ত। বিশেষ করে,সবুজ গাছপালা আপনার ভ্রমনকে অনেক আন্দদায়ক করবে বলে বিশ্বাস করি।
যা যা দেখবেনঃ
১. উত্তর শাকুচিয়া ইউনিয়ন ক্রসডেম এলাকা
২. মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশন
৩. চৌধুরী প্রকল্প
যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ
এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে রুটিন মাফিক। প্রতিদিন ঢাকা থেকে ১টি লঞ্চ বিকাল সাড়ে ৫টার সময় মনপুরা ও হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে পরদিন মনপুরা সকাল ৬টা পৌঁছে। অন্য একটি লঞ্চ ঢাকা থেকে ১ দিন পর পর ছাড়ে। মনপুরার রামনেওয়াজ লঞ্চ ঘাট থেকে প্রতিদিন দুপর ২টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে একটি লঞ্চ ছাড়ে। এছাড়া বিভিন্নভাবে স্থল ও নৌ পথ দিয়ে যাতায়াত করা যাবে।
রাতে থাকার জন্য হোটেল(Hotels for night stay)ঃ
যারা তাঁবুতে না থাকতে চান, তারা হোটেল / বাংলোতে থাকতে পারে (সাধারণ মান)। হোটেল দ্বীপঃ 0171-3965106, প্রেস ক্লাব গেস্ট হাউস: 0191-3927706, হোটেল আইল্যান্ড: সদর রোড, হাজারহাট, 01711701২86, ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ডাক বাংলো: হাজিরহাট বাজারের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত।
মনপুরা দ্বীপের নতুন নতুন ছবি দেখতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন।
আরো পড়ুনঃ
No comments:
Post a Comment