Wednesday, October 17, 2018

ভাসমান পেয়ারার বাজার- বাংলাদেশের একমাত্র ভাসমান বাজার (Floating Payarar Bazar - The only floating market in Bangladesh


যারা থাইল্যান্ডের ফ্লোটিং মার্কেট দেখে ভাবেন এরকম একটি মার্কেট যদি আমাদের বাংলাদেশে থাকতো। তারা অনেকেই হয়ত জানেন না বর্ষায় বাংলাদেশে এমন একটি মার্কেট বসে যা রুপে গুনে অপরুপ ও পুরোপুরি প্রাকৃতিক। প্রতিদিন কয়েক হাজার মন পেয়ারা বেচাকিনি হয় এই অঞ্চলে। দূর দুরান্ত থেকে নদিপথে পাইকাররা এসে এখানে পেয়ারা কিনে। এই এলাকায় রয়েছে অসংখ্য পেয়ারার বাগান। চাষিরা সরাসরি বাগান থেকে পেয়ারা পেরে বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারদের কাছে বিক্রি করে। প্রতি বছরের জুলাই, আগষ্ঠ, সেপ্টেম্বর এই মৌসুমে কয়েকশ কোটি টাকার পেয়ারা উৎপাদন ও কেনাবেচা হয়। ভিমরুলি হাট খালের একটি মোহনায় বসে। তিনদিক থেকেই এই খালটি খোলা আর প্রশস্ত। ভিমরুলি গ্রামের আশেপাশে রয়েছে অসংখ্য পেয়ারা বাগান।পেয়ারার মৌসুম শেষ হলে আসে আমড়ার মৌসুম। এ অঞ্চলে আমড়ার ফলনও সর্বত্র। আর সবশেষে আসে সুপারি। একটু কম হলেও বছরের অন্যান্য সময়ও ব্যস্ত থাকে এই হাট। ফল ছাড়াও এখানের প্রধান পণ্য বিভিন্ন রকম সবজি। একটি ভাসমান বাজার ভ্রমনের জন্য এখন অনেক পর্যটক ই ছুটে বেড়ান ভিমরুলি ঘুরতে।



আরো যে স্থান গুলো ঘুরতে পারেনঃ গুঠিয়া ও দূর্গাসাগর দিঘী।

কোথায় অবস্থিত এবং পরিচিতি :

পেয়ারা বাগানটি অবস্থিত বরিশালের তিন জেলা ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায়। ২৬টি গ্রামের প্রায় ৩১ হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই পেয়ারা বাগান। এ হাট বছরজুড়ে বসলেও প্রাণ ফিরে পায় পেয়ারার মৌসুমে। বরিশালের ভিমরুলি গ্রামের আঁকাবাঁকা ছোট্ট খালজুড়ে সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি। পেয়ারাবোঝাই শত শত নৌকা। মজার বিষয়, এখানে আসা সব নৌকার আকার আর ডিজাইন প্রায় একই রকম। মনে হয় যেন একই কারিগরের তৈরি সব নৌকা।


কিভাবে যাবেনঃ


ঢাকা থেকে বরিশাল সড়ক, নৌ এবং আকাশপথে যেতে পারেন। তবে বরিশাল যেহেতু নদীপ্রধান সেহেতু, সবচেয়ে ভালো হলো নদীপথ, অর্থাৎ লঞ্চে যাওয়া। তবে ঢাকা থেকে সড়ক পথে যাওয়া যায়।ঢাকার গাবতলী থেকে সাকুরা পরিবহনের এসি বাসও যায় বরিশাল। ভাড়া ৮০০ টাকা। এ ছাড়া ‘হানিফ’, ‘ঈগল’, ‘সুরভী’ ও ‘সাকুরা’ পরিবহনের নন-এসি বাসও যায়, ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা।

আর নদীপথে গেলে আপনার নৌভ্রমনের অভিঙ্ঘতা হয়ে যাবে। সদরঘাট থেকে প্রতিদিন রাত ৮টায় বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায় অনেকগুলো বিলাসবহুল লঞ্চ। কোনো একটা পূর্ণিমার রাতে উঠে পড়লে বোনাস হিসেবে পাবেন মনোরম জ্যোৎস্না বিলাস। এর জন্য আপনাকে ভাড়া গুনতে হবে ভিআইপি কেবিনের জন্য ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা, সেমি ভিআইপি কেবিন ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা, ফ্যামিলি কেবিন ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা, ডাবল কেবিন ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং ডেকে জনপ্রতি ২৫৫ টাকা।

আর আকাশ পথে যেতে চাইলে হযরত শাহজালাল (রঃ) আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর থেকে অভ্যন্তরীন ফ্লাইটে যেতে পারেন বরিশাল।

কখন যাবেনঃ


জুলাই থেকে আগস্ট মাস এর প্রতিদিনই জমে এই বাজার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে। ভিমরুলির বাজারের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় হলো দুপর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা।

কোথায় খাবেনঃ


ভিমরুল,আটঘর,কুড়িয়ানা এসব বাজারের পাশেই খাবারের হোটেল আছে মোটামুটি মানের।অথবা জেলা সদরে ফিরে এসেও খাওয়া দাওয়া সেরে নিতে পারেন। বরিশালে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। এখানকার খাবারের সুনাম রয়েছে।

কোথায় থাকবেনঃ

ভিমরুল,আটঘর,কুড়িয়ানা এসব বাজারের পাশেই খাবারের হোটেল আছে মোটামুটি মানের।অথবা জেলা সদরে ফিরে এসেও খাওয়া দাওয়া সেরে নিতে পারেন।


ভাসমান পেয়ার বাজার দর্শনের ট্যুর প্লানঃ

বরিশাল বা স্বরুপকাঠি থেকে নৌকা অথবা ট্রলার নীয়ে পেয়ারা বাজার দর্শন। আশে পাশে পেয়ারার বাগানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করুন মন যতক্ষন চায় ততক্ষন। দুপুরবেলা কুড়িয়ানা বাজারে বৌদের হোটেলের খাবার খেয়ে বাসে চড়ে বানারীপাড়া গুঠিয়া মসজিদ দেখতে চলে যান। গুঠিয়া মসজিদের পাশের সন্দেশ আপনার রসনা বিলাসে নতুন সংযোজন হতে পারে। তাই সন্দেশ খান যার স্বাদ অনেক দিন মনে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। এখান থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে দুর্গাদিঘী দেখে বাসে বরিশাল চলে আসুন। বিবির পুকুর পাড়ে সন্ধ্যা কাটিয়ে চটপটি খেয়ে ঢাকায় ফিরতে পারেন।

ভাসমান পেয়ারার বাগানের নতুন নতুন ছবি দেখতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন। 


আরো পড়ুনঃ

লালাখাল সিলেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান (Lalakhal is the most attractive tourist spots in Sylhet)

No comments:

Post a Comment